প্রতিষ্ঠানের ইতিহাস
মাদরাসার নামঃ খড়িয়া তামিরুল মিল্লাত দাখিল মাদরাসা।

মাদরাসার ঠিকানাঃ গ্রাম + ডাকঘরঃ খড়িয়া, উপজেলাঃ শিবপুর, জেলাঃ নরসিংদী।

প্রতিষ্ঠাতার নামঃ জনাবা আমেনা বেগম, স্বামীঃ মৃত মোঃ আয়েশ আলী খান।

প্রতিষ্ঠাতার ঠিকানাঃ গ্রাম + ডাকঘরঃ খড়িয়া, উপজেলাঃ শিবপুর, জেলাঃ নরসিংদী।

জনাবা আমেনা বেগমের স্বামী রূপালি ব্যাংকের ডি.জি.এম জনাব মোঃ আয়েশ আলী খান ১৯৯৩ সালের ২১ ডিসেম্বর মাসে ইন্তেকাল করেন। তার মৃত্যুর পর তাকে স্থায়ী ঠিকানায় দাফন কাফনের পর তাদের বর্তমান ঠিকানা ঢাকায় চলে যান। সেই শোকাবহ রাত্রিতে আমেনা বেগম তার তিন ছেলে ও দুই মেয়ে নিয়ে বাসায় বসে থাকা অবস্থায় তার ছোট ছেলে তৌফিকুল আলম (রাসেল) তার মায়ের কোলে মাথা রেখে ভারাক্রান্ত হৃদয়ে তার মাকে বলল, “মা আমার আব্বার কবরের পাশে যদি একটি মাদরাসা হয় তাহলে ভালো হতো।” এই কথার সূত্র পাত থেকেই আমেনা বেগম তার স্বপ্নটাকে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ১৯৯৬ সালের দিক প্রতিষ্ঠাতার চাচা শ্বশুর মোঃ দেওয়ান উদ্দিন খান (মুন্সি) এর নিকট উপস্থাপন করেন। তখন তিনি ও তাকে উৎসাহ দিলেন। প্রায় এক বছর পর মোঃ দেওয়ান উদ্দিন খান আমেনা বেগমের চিন্তা ধারাকে বাস্তবে রূপ দেয়ার জন্য খড়িয়া গ্রামের মোঃ আরজু সরকারের ছেলে আবদুল ওয়াদুদ সরকারের সাথে পরামর্শ করেন। পরে হঠাৎ একদিন প্রতিষ্ঠাতার চাচা শ্বশুর মোঃ দেওয়ান উদ্দিন খান, ননদের ছেলে আবদুল ওয়াদুদের এই মাদরাসা ব্যাপারে ঢাকা যাওয়া ছিল তার জীবনের প্রথম। দুপুরে খাওয়ার পর তারা তিনজন মাদরাসা কিভাবে হবে সে সম্পর্কে আলাপ আলোচনা করলেন। তখন প্রতিষ্ঠাতা তার ছেলে মেয়েদের কে ডেকে জিজ্ঞাসা করলেন, তারা এতে একমত আছে কিনা? তারা তাদের মা কে বলেছিল মা আপনি যা করেন তাতে আমরা একমত আছি। প্রতিষ্ঠাতা তার শ্বশুরকে বললেন, “কাকা বাড়িতে গিয়ে এলাকাবাসীর মতামত দেখেন” বাড়িতে এসে তিনি এবং আবদুল ওয়াদুদ এ ব্যাপারে আস্তে আস্তে গণ সমর্থন নিয়ে গন সমাবেশের আয়োজন করেন। গণ সমাবেশের সভাপতিত্ব করে ছিলেন জনাব মোজাম্মেল হক মাষ্টারকে। তখন গন সমাবেশে বিভিন্ন মত উঠে আসে। কেউ বলে মক্তব কেউ বলে এতিম খানা আবার কেউ বলে এসব আমাদের এলাকায় বা পাশ্ববর্তী এলকায় আছে। তখন সেই মূহুর্তে মাওলানা শাফিকুল ইসলাম বললেন, “আমাদের এলাকায় একটি আলিয়া স্কিমের প্রতিষ্ঠান নেই”। তাই এটি করতে পারলে বেশী ভালো হয়। “তিনি আলিয়া শিক্ষার ধরন প্রকৃতিও গুরুত্ব এলাকা বাসাীর নিকট তুলে ধরেন। তারপর সর্ব সম্মতি ক্রমে একটি দাখিল মাদরাসা করবার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। মাওলানা শফিকুল ইসলাম মাদরাসাটির নাম করন করেন। আর এই নাম করন করা হয় ১৯৯৭ সালের শেষের দিকে।

জমি দানঃ
প্রতিষ্ঠানটি করার জন্য আমেনা বেগম তার স্বামীর কবরের পাশে সরকারী বিধি মোতাবেক যে পরিমান জমির প্রয়োজন তা তিনি ওয়াকফ করে দেন। যা বর্তমানে মাদরাসার ভবন ও মাঠ হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। তাছাড়া মোঃ দেওয়ান উদ্দিন খান ৮.৭৫ শতাংশ জমি বিক্রি করে তার অর্থ মাদ্রাসার কাজে দান করেন। মোঃ আরজু মিয়া সরকার ও ৫ শতাংশ জমি দান করেন।

মাদরাসার অব কাঠামো গঠনঃ
প্রাথমিক ভাবে শ্রেণী কক্ষ করার জন্য জমিটির পশ্চিম পার্শ্বে ৬০ ফুট দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট একটি ঘর তৈরী করা হয়। আর তা তৈরী করা হয়েছিল টিনের চাল, সিমেন্টর খুটিও বামের চাটাই দিয়ে। আমেনা বেগম তার স্বামীর কল্যাণ ফান্ডের টাকা দান করেন এই ঘরের জন্য। গ্রামের সাধারন মানুষ ঘরের ভিটের মাটি ভরাট কাজে অংশ নিয়েছিল। কিছুদিন পর উত্তরের ভিটে আরো একটি ঘর তৈরি করা হয়ে ছিল টিনের চাল টিনের বেড়া দিয়ে তার দৈর্ঘ্য ছিল ৪০ ফুট। ঘর তৈরীতে যাদের আর্থিক অবদান ছিল তারা হলেন জনাব নাজমুল হক (সাজু), প্রতিষ্ঠাতার বড় মেয়ে ডাক্তার ফরিদা ইয়াছমিন। এসব কাজে আবদুল ওয়াদুদ সার্বিক ভাবে সাহায্য করেছিল। আবদুল ওয়াদুদ ছিল তখন ছাত্র।

কমিটির গঠনঃ
প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য সরকারী বিধি মোতাবেক একটি অর্গানাইজিং কমিটি গঠন করা হয়। উক্ত কমিটিতে নিম্ন বর্ণিত লোকজন সদস্য হিসাবে ছিলেন। জনাবা আমেনা বেগম, জনাব আমেনা বেগম, জনাব মোজাম্মেল হক মাষ্টার, জনাব নাজমুল হক সাজু, মোঃ আরজু সরকার, বাজনাব গ্রামের মোঃ মাহাবুব, কালুয়ার কান্দার আঃ রহিম মৌলভী, মাওলানা শফিকুল ইসলাম, মোঃ আতাউর রহমান আফ্রাদ, মোঃ হাবিবুর রহমান কতিপয় ব্যক্তিবর্গ।

প্রতিষ্ঠাকালীন জনবল কাঠামোঃ
প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে যারা শিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন তাদের মধ্যে মোঃ আতাউর রহমানে আফ্রাদ। তিনি ছিলেন প্রতিষ্ঠাকালীন সুপার । প্রতিষ্ঠানটিকে স্বয়ং সম্পূর্ণ ভাবে রূপদান করতে তনিি অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। যার পরিশ্রমের ফসল আজ খড়িয়া তামিরুল মিল্লাত দাখিল মাদরাসা। শিক্ষকদের মধ্য থেকে যার অবদান না বললেই নয়। প্রতিষ্ঠানের অফিসিয়াল কাজে সার্বিক ভাবে তৎকালীন সুপারের সাথে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছিলেন জনাবা লুৎফুন্নাহার । শিক্ষক হিসাবে আরো যারা দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তাদের মধ্যে গোলাম মর্তুজা জামাল, মোঃ কামরুল ইসলাম খান, শফিকুল ইসলাম, হেলেনা বেগম, আবুল হোসেন, নাসির উদ্দিন, বেলায়েত হোসেন, মমতাজ বেগম, মানজুর হোসোইন, মাহবুব আলম, উম্মে সফুরা ডলি, আবেদা খানম, নূরে আলম। দীর্ঘ সাতটি বছর বিনা পারিশ্রমিকে তারা প্রতিষ্ঠানটির হাল ধরে রেখে ছিলেন। প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলার পেছনে যাঁেদর অবদান ভুলার মতো নয় সে সকল বরেন্য ব্যক্তি গুলো ছিলেন তৎকালীন মন্ত্রী নূরু উদ্দিন খান, মেহের আফরোজ চুমকি, বোরহান উদ্দিন প্রাথমিক অনুমতি পেতে সহযোগিতা করেছিলেন। প্রতষ্ঠিানটি প্রাথমিক অনুমতি লাভ করে ০১/০১/২০০০ইং সালে একাডেমকি স্বীকৃতি লাভ করে ০১/০১/২০০১ইং সালে। এম.পি ও ভুক্তি করতে যারা সহযোগিতা করেছিলেন তাদের মধ্যে জনাব তোফাজ্জল হোসেন মাষ্টার ও তৎকালীন মাননীয় মন্ত্রী জনাব আবদুল মান্নান ভূঞা সাহেবের ডি. ও লেটারের ভিত্তিতে তাৎক্ষনিক ভাবে ০১/০৫/২০০৪ ইং সালে প্রতিষ্ঠানটি এম.পিও ভুক্তির তালিকা ভুক্ত হয়।